বিচিত্র ফাঁদ পাতা এ ভুবনে (পর্ব-২২)

বিচিত্র ফাঁদ পাতা ভুবনে/বাইশ
লেখক – কামদেব
—————————

সুসি চেঞ্জ করল তার পরনে ঢিলা জামা আর শর্টস।দুজনের মিল দিয়ে গেল।চোখে মুখে জল দিয়ে খেতে বসে।সামনে খাবার দেখে পেটের মধ্যে ক্ষিধে চাগাড় দিয়ে ওঠে।শীত-শীত ভাব জড়োসড়ো হয়ে বসে অঞ্জন।গায়ে একটা চাদর জড়িয়ে দেয় সুসি।অঞ্জন হেসে বলে,এখানে এত ঠাণ্ডা বুঝিনি।
–একটু ড্রিঙ্কস দিই? জিজ্ঞেস করে সুসি।
সম্মতির অপেক্ষা না করেই দুটো গেলাসে পানীয় ঢেলে নিল সুসি।
–যদি কিছু হয়? অঞ্জনের কণ্ঠে শঙ্কা।
–কি হবে? আমি আছি তো।অঞ্জনকে অভয় দেয় সুসি।ছেলেটাকে মায়ের কবল থেকে বের করা দরকার।অবশ্য নিজেই বউ বলে পরিচয় দিয়েছে।আনজানের মুখ থেকে এমনটা প্রত্যাশা করে নি।দুজনে খাওয়া শুরু করে।গেলাসে চুমুক দিয়ে বলে সুসি, তুমি আমাকে বললে মিসেস গোস।আমাদের ত সাদি হয় নি।
–সেতো বাহ্যিক অনুষ্ঠান। এক সময় করলেই হবে। তোমার কোনো আপত্তি নেই তো?
–আপত্তি থাকলে তোমার সন্তানের ভার নিতাম না।অজান্তে বাম হাত নিজের পেটে রাখে সুসি।
–এখানে কোন রেজিস্টার তোমার জানা আছে?
–এখানেই করবে? ম্যাডাম নারাজ হবে নাত?
অঞ্জন বা হাতে সুসির গলা জড়িয়ে মুখে চুমু দেয়।সুসির মুখের পানীয় চলে যায় অঞ্জনের পেটে।এক অপুর্ব শিহরণ অনুভব করে সুসি।সেও পালটা চুমু দিল অঞ্জনকে। অঞ্জনের মাথা ঝিমঝিম করে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে,সামনে খাবারের দিকে তাকিয়ে থাকে।তুলে খাবার সামর্থ্য নেই যেন।সুসি লক্ষ্য করে অঞ্জনের অবস্থা।গলা জড়িয়ে ধরে বাচ্চাকে খাওয়াবার মত খাওয়াতে থাকে আনজনকে।বাধ্য ছেলের মত অঞ্জন খেতে লাগল।সুসি বেশ মজা পায়।মাথা ভারী হয়ে আসে। সুসির কাধে হেলে পড়ে অঞ্জনের মাথা।জামা খুলে বুক আলগা করে দিল সুসি।ফর্সা পীতাভ গায়ের রঙ তাই ছোট ছোট স্তনের উপর বাদামী রঙের বৃন্ত স্পষ্ট।স্তনের উপর অঞ্জনের মুখ ঘষাঘষি হওয়ায় সুসির শরীর গরম হয়ে যায়। কিন্তু আনজান এই অবস্থায় পারবে কি? ওকে ড্রিঙ্ক না করালেই ভাল হত।সুসির কাঁধে ভর দিয়ে বেসিনের কাছে গিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলে অঞ্জন। তারপর কম্বলের নীচে ঢুকে পড়ে দুজনে।সুসির সারা শরীরে উত্তেজনার প্রবাহ।ঘুম আসেনা। আনজানের বাড়াটা ধরে চটকাতে লাগল। স্পঞ্জের মত নরম করতলে পিষ্ঠ হতে থাকে।আনজানের মুখ নিজের বুকে চেপে ধরে।অন্তত একবার রমণ না করলে ঘুম আসবে না।যখন আনজান কাছে ছিল না এরকম মনে হয়নি।আজ কেন এমন হচ্ছে ভেবে নিজেই অবাক হয়। আনজানকে জড়িয়ে ধরে বুকে বুকে চেপে বসল সুসি।অঞ্জন সুসির ঠোট মুখে নিয়ে চুষতে থাকে, আশান্বিত বোধ করে সুসি।একেবারে বেহুশ হয়নি। পুরুষাঙ্গটা নিয়ে চেরার মুখে ঘষতে লাগল। পা দিয়ে অঞ্জনের কোমর জড়ীয়ে ধরে আবার পা ফাক করে বাড়াটা ঘষতে থাকে।এভাবে ধীরে ধীরে বাড়া শক্ত হতে থাকে। শীতল পরিবেশে একটু সময় লাগে।পাছার নীচে আনজানের শিথিল শরীর সুসি বুঝতে পারে ট্রেনের ধকল তার উপর মাদকের প্রভাব তার আশা পুরণ হবার সম্ভাবনা নেই।প্রবল বাহুবন্ধনে ধরে রেখে ঘুমোবার চেষ্টা করে। চোখে মুখে আনজানের উষ্ণ নিঃশ্বাস অনুভব করে।বিষয়-বুদ্ধি হীন এই মানুষটাকে এভাবে চিরদিন তাকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে। কেউ যাতে কেড়ে নিতে না-পারে যার পরনাই আকড়ে ধরে থাকে আনজানকে।
ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যায় সুসির,দাঁত ব্রাশ করে পটি সেরে নিল। ভাল করে আনজানকে ঢেকে দিল।কেউ এসে পড়তে পারে।বলতে না বলতে দরজায় টোকা পড়ে। দরজা খুলতে বেয়ারা ঢুকে বলে, গুড মর্নিং ম্যাম। চা টোষ্ট দিয়ে গেল।
সুসি দরজা বন্ধ করে আনজানকে ডেকে তোলে।নিজের দিকে তাকিয়ে লজ্জা পায়, দ্রুত পায়জামা টেনে নিয়ে পরে ফেলে।সুসি অন্যদিকে তাকিয়ে বলে,ওয়াশ করে নেও চা ঢালছি।
অঞ্জন কাছে এসে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল সুসিকে।তারপর বাথরুমে চলে গেল। সুসি রুটিতে মাখন লাগাতে থাকে।একটু পরে অঞ্জন বেরিয়ে এল।
–কই চা দিয়েছো?
–বোসো দিচ্ছি।টি-পট হতে চা ঢালতে থাকে।
অঞ্জন সুসির মুখ তুলে চমু খায়।
–কি হচ্ছে কি চা পড়ে যাবে।মুখ ছাড়িয়ে নিল সুসি।কাল রাতে এত এনার্জি কোথায় ছিল?
–খুব টায়ার্ড ছিলাম।বাড়ি চলো তখন দেখাবো এনার্জি।
–কোন বাড়ি?
–আপাতত তোমার বাড়ি।অনজন বলে।
সুসি বুঝতে পারে তাহলে ম্যাডামের সঙ্গে কথা হয় নি।কোই বাত নেহি আনজান ঠিক থাকলে আর কিছু চাই না। রেজিস্ট্রির কথা বলছিল টাউনে একজন পয়চান লোক আছে কথা বলা যেতে পারে।সাবিত্তির সঙ্গে দেখা হয়নি বহুকাল।চা শেষ করে বেরিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে খোজ নিল,টিকিটের কি ব্যবস্থা হল? ফিরে এসে বলল, খেয়েদেয়ে রেডি হয়ে নেও।
–কেন?
–তুমি বললে না রেজিস্ট্রির কথা।আমি ভীমাকে আসতে বলে এলাম।
–এখানেই করবে?
–তা হলে কলকাতায় গিয়ে হবে।সুসি বলল।
–না চলো এখানেই সেরে ফেলি।শুভস্য শীঘ্রম।
সুসি আনজানকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়।
অঞ্জন জিজ্ঞেস করে, আজ গেলে আজকেই রেজিস্ট্রি হয়ে যাবে? শুনেছি আগে নোটিশ দিতে হয়।
আনজানের বুকে মুখ রেখে সুসি বলে,মগর চিনাজানা থাকলে ঐসব কোন ব্যাপার নয়।দেখি এক এ্যাডভোকেট বন্ধু ছিল খোজ-খবর নিতে হবে।
–তুমি আমার গার্জেন।আমি কোন কাজের না।
–তুমার তুমার বাচ্চার সব দায়িত্ব আমার।তুমাকে কুনো চিন্তা করতে হবে না।
ভীমা নীচে অপেক্ষা করছে।মি.সহায় সাইটে চলে গেছেন।অঞ্জনরা খাওয়া-দাওয়া সেরে প্রস্তুত।অপেক্ষা করছে ম্যানেজারের জন্য। কিছুক্ষন পর দেখা পাওয়া যায় হাসি মুখে আসচ্ছেন।আজ রাতে রওনা দিতে হবে ফার্ষ্টক্লাসের টিকিট পাওয়া যাবে।সুসি কনফার্মড করে দিল।গাড়িতে উঠে বসল।
গাড়ি ক্রমে শহরের পথ ধরলো।একটা ঘিঞ্জি মত গলির মুখে গাড়ি দাড়াতে পথ চলতি একজনকে ডেকে সুসি জিজ্ঞেস করে, সাবিত্তির থাপা এ্যাডভোকেটের বাড়ি কোথায়?
–তোমার বন্ধু তুমি চেনো না? ভিতর থেকে অঞ্জন বলে।
লোকটি হাতের ইশারায় কি যেন দেখালো।সুসি গাড়ি থেকে নেমে অঞ্জনকে বসতে বলে সেদিকে এগিয়ে যায়।কিছুক্ষন পর ফিরে এল হাসতে হাসতে।অঞ্জনকে নেমে আসতে বলে।দুজনে কিছুটা এগোতে নজরে পড়ে এক ভদ্রমহিলা তাদের দিকে তাকিয়ে হাসছেন। প্যাণ্ট-শার্ট পরনে,মাথায় ছোট ছোট চুল।সুসির মত সুন্দরী নয়।
–ওয়েল কাম।নমস্তে।
অঞ্জনও প্রতিনমস্কার করে।মহিলার সঙ্গে একটা ঘরে ঢুকলো দুজনে।সুসি আলাপ করিয়ে দেয়,হামার হাবি আনজান।এ বন্ধু আছে সাবিত্তির।সুসির মুখে সব কথা শুনে প্রথমে অভিমান করেন সাবিত্তির। তারপর বলে,হয়ে যাবে লেকিন সারটিফিকেট ক্যুরিওরে দুদিন পর পাঠাবে।
সুসি তাকায় অঞ্জনের দিকে।অঞ্জন ঘাঢ় নাড়িয়ে স্রাগ করে। কাগজ-পত্তর বের করে সই-সাবুদ করে।বেরিয়ে ভীমাকে ডেকে আনে,সাবিত্তির বাড়ির ভিতর গিয়ে কয়েক জনকে ডেকে আনলো। সাক্ষী হিসেবে সই করলো সবাই।সাবিত্তির খাবার জন্য পীড়াপিড়ি করলো।ট্রেনের সময়ের বাহানা দেখিয়ে সুসি এড়িয়ে গেল।একদিন জরুর আসবে খেয়ে যাবে কথা দিতে হল।
এখন আইনত সুরভি আর অঞ্জন বিবাহিত।উভয়ের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ভিন্ন।অঞ্জন শান্ত এবং সুসি ছটফট করছে।কি করবে বুঝতে পারে না। মন তার আকাশের মত উদার। একটা একশো টাকার নোট ভীমাকে দিল সুসি।হোটেলে ফিরে ফোন করল বাড়িতে।
–হ্যালো মম?….কাল পৌছাবো….আমাদের সাদি হয়ে গেল….রেজিস্ট্রি…হ্যা আনজান…এখুন তোমার কাছে থাকবো….দেখি আনজান কি বলে..কথা হয়নি এখনো….ও রুমে আছে…লাইক শিউজি…রাখছি? গুড নাইট।
মাল-পত্তর গোছগাছ শুরু করে দিয়েছে।অঞ্জন একবার মি.সহায়ের সঙ্গে দেখা করে এল।বেরোবার মুখে হোটেল থেকে ফুড পার্শেল দিল।সুসি ভেবেছিল ট্যাক্সি নিয়ে নেবে।নীচে নেমে দেখল ভীমা দাঁড়িয়ে আছে।

চলবে ———-

Leave a Comment