হ্যাল্লো বন্ধুরা…!!!! কেমন আছেন সবাই ?!!
গত পর্বের পর আজ তার দ্বিতীয় পর্ব ।
আগের পর্ব টা পড়ে নেবেন প্লিজ 🥺🥺
হ্যাঁ, সেই তো সবাই মিলে গ্রুপে চ্যাট করতে এসেছিলাম। তারপর কি হলো !
সেটাই আজ বলবো….
Message গুলো যেমনভাবে লিখেছিলাম আমরা, সেটাই মোটামুটি কপি করে দেবার চেষ্টা কচ্ছি , আমার মনে হয় এতেই বেশি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন পাঠক পাঠিকারা ।
প্রথম মেসেজ টা আমিই ছুঁড়ে দিলাম।
আমি – Sorry রে বিপ্লব !!
রজত – !!!!
সোনালী – (আমার message টা কে draw করে) me too @Biplob
পায়েল – I am also…. extremely sorry😔
রজত-🙄
বিপ্লব সব সিন করছিল কিন্তু reply দিচ্ছিল না ।
রজত বালটা আবার “!!!…” ….. “🙄🙄” এই পাঠালো… বাল বুঝতেও পারে নি যেনো যে বিপ্লবের অস্বস্তি লাগছে !
রোহিত একটু পরে লিখলো , @Rajat তুই বারবার “!!!” Send করছিস কেনো বলবি একটু !
রজত – আমি বুঝতে পারছি না এতে মেয়েদুটোর sorry বলবার কি আছে ! ওদের তো 😏😏 হিহিহিহি!!!!
পায়েল বলে উঠলো – সবসময় ফাজলামি ভালো লাগেনা রজত! লিমিট ক্রস করিস না..!!!!
এতক্ষণ পর বিপ্লবের একটা reply এলো।
বিপ্লব – বলছি টপিক টা change করলে খুশি হই… Plz থাম তোরা ! হাতজোড় করে request করছি !
আমরা একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম । যাক! শেষমেশ কিছু তো বললো ছেলেটা!
তারপর দেখলাম “biplob is typing…” লেখা উঠছে। আমরা যেনো রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষায়, যে সে কি বলতে চলেছে!!
বেশ খানিকক্ষণ টাইপিং লেখাটা উঠলো, ভাবলাম অনেককিছু লিখছে…
তারপর ওর ছোট্টো একটা মেসেজ এলো, ” একটা রিকোয়েস্ট রাখবি আমার তোরা!”
আমার সন্দেহ হলো, বিপ্লব এতটাও slow type তো করে না ?! কি এত লিখছিল সে! এতটা অপেক্ষার পর…. এইটুকু মেসেজ!
বেশ বুঝতে পারলাম যে সে নিজের প্রথমে লেখা মেসেজটা ক্লিয়ার করেছে। যাইহোক আমি reply দিলাম
” অবশ্যই। বল কি করতে হবে?”
বিপ্লব- বেশি কিছু না। নবীনকাকাদের পুরনো বাগান বাড়িটার পিছন দিকে meet করতে পারবি একবার? তোদের সবাইকেই বলছি দেখা করতে।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, নবীন কাকার ওই বাগানবাড়ি টা এ তল্লাটের সবচাইতে বেশী নির্জন জায়গা। আমাদের স্কুলের সব মস্তান গুলো ঐখানে জড়ো হয়ে দল বেধে কুবুদ্ধির মতলব ভাঁজতো।
রোহিত বললো, ” হঠাৎ ওখানে!”
বিপ্লবের উত্তর এলো নিমেষে…” সব কথা ফোনে বলা যায়না। যদি আমাকে তোরা বন্ধু ভাবিস, তবে এসে প্রমাণ দে। আর যদি তোরা নারাজ থাকিস, তাহলে বুঝবো , আগের ঘটনাটায় তোরা মজা লুটেছিস।”
এরপর আর কোনো কথা বলা যায়না।
পায়েল ওকে শান্ত হতে অনুরোধ করলো।
একে একে সবাই সম্মতি জানালাম।
রজত বললো, “তো দেখা করবি কখন?”
Biplob- ” যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব। আজ বিকেলে পারলে আজকেই।”
***
বিকেলে যথারীতি আমরা পৌঁছলাম সকলেই। বেশ একটা অজানা উত্তেজনা ঘিরে রেখেছিল আমায়। বাকিদের কথা ঠিক বলতে পারবনা, কারণ ওরাও চুপ ছিল। মুখে সব্বার কুলুপ!
কিছু পরে, একটা আমগাছের দল থেকে ঝুপ করে নামলো আমাদের বিপ্লব।
বললো কিরে তোরা সবাই এসেছিস দেখছি।
তারপর সবাইকে অবাক করে দিয়ে রজত বলল – “হ্যাঁ এসেছি ,আর এটা তোর জন্য । আমাদের সবাইকে ভাগ দিস যেন ! দেখলাম রজতের হাতে একটা ঠোঙ্গা ভর্তি করে জিলিপি। বিপ্লব জিলিপি সবার হাতে একটা করে দিতে দিতে বলল x আজ তোরা যখন চলে এলি তখন আমি আসিনি আমার আসতে কিছুক্ষণ সময় লেগেছিল খেয়াল করেছিস নিশ্চয়ই।”রোহিত বললো হ্যা , কিন্তু তুই কি কোথাও গেছিলি? ঠিক তার পরে পরেই? জানিনা ঠিক,… কিন্তু দেখ আমার বাড়ি আসার রাস্তায় তোর বাড়িটা পড়ে। তখনই যদি আসতিস তাহলে পিছনে দেখতে পেতাম। আমি খুব একটা জোরে সাইকেল চালাই না ।
তখন বিপ্লব বলল , “হ্যাঁ আমি আসিনি । এমনিতেই যেটা আমার সাথে আজ ঘটলো সেটা একটা হেস্তনেস্ত না করে আমি ছাড়বো না। সেজন্যই তোদের আজ ডেকেছি।”
পায়েল বলল ” সে তো বুঝতেই পারছি কিন্তু কি করছিলি তখন সেটা বল।”
সোনালী এতক্ষণ চুপ করেছিল । ও হঠাৎ করে উঠে এসে বিপ্লবের হাত দুটো ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল আমরা অবাক হয়ে বসে রইলাম।
তারপর আমাদের আরো অবাক করে দিয়ে বিপ্লব ওর কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে বলল “কাঁদিস না.… ”
আমাদের উপস্থিতির কথা ভুলে গিয়ে সোনালী অকে জরিয়ে ধরল ও সোনা লিখে সোনালী ওর গাল দুটো ধরে বলল, ” সরি রে তখন আমাদেরও হাত-পা বাঁধা ছিল …. আমরা বসে বসে সবকিছু দেখলাম ! অথচ কিছু করতে পারলাম না!!! ” তারপর আবার কাঁদতে শুরু করল।
বিপ্লব ওর মাথায় আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, “হুঁ… দেখছি । সবকিছু সহ্য করার সীমা থাকে একটা!”
তারপর আমাদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলতে শুরু করল বিপ্লব। “মানছি স্যার রাগী। এতদিন আমরা ভুল করতাম বলে স্যার শাস্তি দিত কিন্তু আজ ! This is too much … অসহ্য!
আজ তোরা লক্ষ্য করেছিস যে স্যার খানিকটা বেশিই রেগেছিল তার কারণ আন্টি। অন্যদিন আন্টি এত মিষ্টি করে কথা বলে, চা দিয়ে যায় আজ ব্যতিক্রম দেখলাম সেই মানুষটার মধ্যে ! কোনো কারণ ছাড়াই ! তা কি হয় ! তারপর ছুটির সময় কি একটা মনে হতে আমি স্যারের শোবার ঘরের জানালার নিচে লুকিয়ে বসেছিলাম কিছুক্ষণ। অদ্ভুত ব্যাপার কী জানিস আজ আমি ওখান থেকে তোদের সঙ্গেই বেরিয়ে এসেছি । তারপর কখন যে লুকিয়ে লুকিয়ে জানালার নিচের দিকে গেছিলাম স্যার খেয়াল করেনি। হয়তো ভাগ্য আমার সহায় ছিল। শুনলাম আন্টি খুব চিৎকার চেঁচামেচি করছে আর একটা কথাই বারবার ফোকাস করছিল বিয়ের পর তুমি কোন সুখ দিতে পেরেছ আমায় ! আর স্যার কোনো একটা লোকের নাম বলছিল… ঠিক বুঝতে পারিনি …বলছিল ওই লোকটা কি তোমায় সব সুখ দিচ্ছে তাই না সেই জন্য আমায় বিষ লাগছে!
বেশ বুঝতে পারলাম গার্হস্থ্য অশান্তি। দেখ একটা কথা তো সত্যি যে স্যারের হাতে আমাদের পরীক্ষার অনেক কিছু ডিপেন্ড করছে কিন্তু যেটা করেছে সেটা শাস্তি আমরা লীগাল ওয়েতে হয়তো নিতে পারি কিন্তু তাতে সবকিছু জানাজানি হয়ে যাবে আর বাড়িতে জানতে পারলে গার্জেনরা আমায় কি ভাববে ! সে আমার গার্জেন হোক বা আর স্কুলের বাকি ছাত্র-ছাত্রীদের বাবা-মা , বাড়ির লোকজন, পাড়া-প্রতিবেশী….!!!!
আমি চাই কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে। তোদের সঙ্গে এটাই প্ল্যান করার জন্য…. আসলে আর তোদের সাহায্য দরকার। স্যারের বউ এর বিষয়টা আমার আরো স্পষ্টভাবে জানা দরকার। এই অশান্তিটা যে গোত্রের…. যে বিষয় নিয়ে… তাতে আমার মনে হয় না যে জিনিসটা একদিনে মিটবার। আমার ইনফরমেশন চাই। করবি সাহায্য আমাকে!”