Written by কথকদা
মুখবন্ধ
সব মানুষের মধ্যেই নাকি একজন ডক্টর জেকিল আর একজন মিস্টার হাইড থাকে। কখনো ডক্টর জেকিল আধিপত্য বিস্তার করে তার উপরে, কখনো মিস্টার হাইড। কথাটা যে চরম সত্যি তা নিজেকে দিয়েই টের পাচ্ছি আমি। আমার ভিতরের চিরচেনা ভাল মানুষ ডক্টর জেকিলকে গত কয়েকদিন ধরে কুপোকাত করে রেখেছে কুৎসিত চিন্তার কুলাঙ্গার মিস্টার হাইড। তার কুমতলবে এবং কুমন্ত্রণায় গত কয়েকদিন ধরে কয়েক কোটি কুচিন্তা মাথায় নিয়ে কালরাত্রি কাটাচ্ছি আমি। সেইসব কুচিন্তার কুফলই হচ্ছে এই কু-গল্পটা।
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ – এই গল্পের সকল চরিত্রই অবাস্তব। জীবিত বা মৃত কোন মালের লগে ইহার কোন মিল নাই। কোন মিল পাওয়া গেলে তা একান্তই কাকতালীয় বা লেখকের বদমাইশি বলে ধরে নিতে হবে।
পূর্ব কথা
রায়পুর, আগে বর্ধিষ্ণু গ্রাম ছিল। এখন এটি একটি ছোট শহর। অনেককাল আগে এই অঞ্চলের জমিদার যোগেন্দ্রনারায়ণ রায় ব্রিটিশদের তাঁবেদারি করে রায় বাহাদুর খেতাব পায়। আগে এই অঞ্চলের নাম বাসন্তি ছিল। এই জমিদার পরিবারের প্রতাপে জায়গাটার নাম বাসন্তির থেকে রায়পুর হয়ে যায়।
জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির সময় শেষ জমিদার ছিলেন দর্পনারায়ন রায়। তার দুই পুত্র দেবনারায়ন ও রুপনারায়ন। রুপনারায়নের যখন চোদ্দ বছর বয়স তখন বিষধর সাপের কামড়ে তার মৃত্যু ঘটে। দেবনারায়ন ছিল অত্যন্ত বিচক্ষন ও ঝানু ব্যবসায়ী প্রকৃতির। জমিদারি চলে যাবার পরে দেবনারায়ন প্রথমে ছোট নাগপুরের একটি কলিয়ারি লিজে নেন। এরপরে নানাধরণের ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন।
পিতা দর্পনারায়নের মৃত্যুর পরে দেবনারায়ন তাদের আদি জমিদার বাড়িটি সরকারকে স্কুল করার জন্য দান করে দেন। আর শহর থেকে একটু দূরে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে হাই ওয়ের ধারে তাদের প্রায় দু বিঘা জমি ছিল। থাকার জন্য এই জমির উত্তর দিকে একটা সুন্দর দ্বিতল বাড়ি তৈরি করেন। বাড়িটি উত্তর দিশায় ছিল বলে বাড়িটির নাম উত্তর মহল রাখেন। সদর দরজা দিয়ে ঢুকেই বিশাল ড্রয়িং কাম ডাইনিং রুম যেটি বাড়ির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত চলে গেছে। ড্রয়িং রুমটির বাঁ পাশে শুরুতে এটাচ বাথরুম সহ একটা বড় বেডরুম, এর ঠিক পাশেই একটা কমন বাথরুম। তার পাশে রান্নাঘর। আর এর পাশেই একদম শেষে একটা ছোট রুম। এটি স্টোররুম বা চাকর-বাকরদের থাকার জন্য যে কোন পারপাসে ব্যবহার করা যেতে পারে। ড্রয়িং রুমটির একদম শেষদিকে একটা সিঁড়ি দোতলায় উঠে গেছে। ড্রয়িং রুমটির ঠিক ডানপাশে এটাচ বাথরুম সহ দুটো বড় বেডরুম। সিঁড়ি দিয়ে উঠেই একটা লম্বা প্যেসেজ দোতলার এমুড়ো থেকে ও মুড়ো চলে গেছে। প্যাসেজটির বাম পাশে এটাচ বাথরুম সহ দুটো বড় বেডরুম আবার ডান পাশেও একি রকম এটাচ বাথরুম সহ দুটো বড় বেডরুম।
পুরো জমিটাই দেবনারায়ন প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিয়েছিলেন। ঊর্মিলার বাগানের সখ ছিল তাই দেবনারায়ন খুজে পেতে একজন ভাল মালি নিয়োগ করেন। তার নাম রমাকান্ত। ঊর্মিলা ও রমাকান্ত দুজনের যৌথ প্রচেষ্টায় খালি জমিতে অতি মনোরম এক ফুলের বাগান তৈরি হয়। দেবনারায়ন রমাকান্তের কাজে খুশি হয়ে পাকাপাকিভাবে তাকে মালির কাজে নিযুক্ত করেন। আর তার থাকার জন্য বাগানের পাশে একটা ঘর তৈরি করে দেন। রমাকান্ত এখানে একাই থাকত, তার পরিবার দেশের বাড়ি ভাগলপুরে থাকত। রমাকান্ত কিছু দিনের মধ্যেই তার সুমিষ্ট ব্যবহার ও কাজের মাধ্যমে সকলের মন জয় করে নেয়।
এই দেবনারায়ণ ও ঊর্মিলার দুই সন্তান, বড়টির নাম বিরেন আর ছোটটির নাম সুরেন। বিরেন সুরেনের থেকে মাত্র দু বছরের বড় ছিল। দেবনারায়ন কিন্তু তার ছোট ছেলেকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসত। এর পেছনে এই পরিবারের একটা ইতিহাস আছে।
অনেককাল আগে এই জমিদার পরিবারের এক কনিষ্ঠ সন্তান এক তান্ত্রিককে সিঁড়ির থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তান্ত্রিক গুরুতর আহত হয় এবং মৃত্যুর পূর্বে অভিশাপ দিয়ে যায় যে পরবর্তী প্রজন্ম থেকে এই পরিবারের সমস্ত কনিষ্ঠ সন্তানের অপঘাতে মৃত্যু ঘটবে। আর সাতদিনের মধ্যেই তান্ত্রিকের অভিশাপের ফল ফলবে। আশ্চর্য ভাবে সাতদিনের মাথায় সেই কনিষ্ঠ সন্তানটির বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু ঘটে। সেই থেকে আশ্চর্যজনক ভাবে পুরুষানুক্রমিকভাবে এই পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তানদের অপঘাতে মৃত্যুর ধারা চলে আসছে।
এই কারনে দেবনারায়ন ও তার স্ত্রী ঊর্মিলা আতঙ্কিত ছিল পরিবারের অভিশাপ নিয়ে। এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবার জন্য দেবনারায়ন ও ঊর্মিলা দুজনেই মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে মানত করত। বাড়িতে পুজা আচ্চা, যাগ যজ্ঞ, সাধু সন্তদের আনাগোনা লেগেই থাকত। কিন্তু সুরেনের যখন বারো বছর বয়স তখন দুদিনের জ্বরে ভুগে এক অজানা রোগে ঊর্মিলা দেবি আচমকা মারা যান। দেবনারায়ন বাবু মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়লেও ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিজেকে সামলে নেন।
বিরেন ও সুরেন এই দুই ভাইয়ের চরিত্র একদম বিপরীতধর্মী ছিল। সুরেন ছিল সরল, সাদাসিদে আর বিরেন ছিল ততটাই চতুর। বিরেন নিজের আখেরটা খুব ভাল বুঝত। এই কারনে সুরেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেবনারায়নের মনে একটা চিন্তা ছিল।
দুই ছেলে বড় হতে থাকে। বিরেনের যখন কুড়ি বছর বয়স তখন দেবনারায়ন তাকে কিছু ব্যবসার দায়িত্ব দিয়ে রানিক্ষেত পাঠিয়ে দেয়।
এই রানিক্ষেত দেবনারায়নের বাল্যবন্ধু নিখিল থাকত। নিখিল ও তার স্ত্রী মিনাক্ষির সাথে দেবনারায়নের খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। তাদের একমাত্র কন্যা ঋতম্ভরাকে দেবনারায়ন খুব স্নেহ করতেন। ঋতম্ভরার যখন দশ বছর বয়স তখন হঠাৎ তার মা মিনাক্ষি মারা যান। এর ঠিক তিন বছর পরে নিখিল আবার বিয়ে করেন। বন্ধুর এই দ্বিতীয় বিয়ের কথা কানে যেতে দেবনারায়ন অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হন, রানিক্ষেতে আসেন বন্ধুর সাথে দেখা করতে। নিখিলের দ্বিতীয় পক্ষ হেমাঙ্গিনী দেবিকে দেখে অবাক হয়ে যান। একটা হাঁটুর বয়সী মেয়েকে বিয়ে করেছে দেখে বন্ধুর সাথে দেবনারায়নের ভাল মতন মনোমালিন্য হয়। প্রথম পক্ষের মেয়ে আছে তার উপর বয়সের এত তফাৎ তাও হেমাঙ্গিনী দেবির মত সুন্দরি কি কারনে নিখিলকে বিয়ে করতে রাজি হল সেটা দেবনারায়নের মাথায় ঢোকে না। এর পর থেকেই নিখিলের সাথে দেবনারায়নের সম্পর্ক কেটে যায়।
বিয়ের দু বছর পরে নিখিল ও হেমাঙ্গিনীর একটি পুত্র সন্তান হয়, নাম সব্যসাচী। সত ভাই বোন হলেও দুজনের মধ্যে ভাব ভালবাসা ছিল অসম্ভব। বয়সে অনেকটা বড় হবার দরুন ঋতম্ভরার মধ্যে দিদির থেকে মায়ের রোলটাই বেশি প্রকাশ পেত। ভাইকে সব সময় আগলে আগলে রাখত। আর সব্যসাচীও ছিল অসম্ভব দিদি ন্যাওটা।
এতদিন পরে বড় ছেলে রানিক্ষেত যাচ্ছে দেখে দেবনারায়ন ছেলেকে নিখিলের সাথে যোগাযোগ করতে বলে। বাবার কথামত বিরেন একদিন সময় করে বাবার বাল্যবন্ধুর বাড়িতে হাজির হয়।
এখানে এসে বিরেন জানতে পারে বাবার বাল্যবন্ধু নিখিল বছর দুয়েক আগে মারা গেছেন। বিরেন নিখিলের বাল্যবন্ধুর ছেলে শুনে হেমাঙ্গিনী ও ঋতম্ভরা দুজনেই খুব খাতির যত্ন করে। ক্ষনিকের আলাপে ঋতম্ভরাকে বিরেনের মনে ধরে যায়। ঋতম্ভরা তখন আঠারো আর বিরেন কুড়ি, প্রেম হতে সময় নেয় না। দুবছর পরে দুজনের ঘটা করে বিয়ে হয়ে যায়।
আবার সুরেনের যখন কুড়ি বছর বয়স হয় তখন দেবনারায়নের ধারনা হয় ছেলের উপর থেকে অভিশাপ কেটে গেছে। ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রি খুজতে থাকেন। সুরেন খুব ভালমানুষ টাইপের ছিল। সেই কারনে দেবনারায়নের ধারনা ছিল বিরেন তার ছোট ভাইকে সম্পত্তির ভাগ থেকে ঠকাতে পারে। মনে মনে ঠিক করে নিয়েছিলেন সুরেনের জন্য চালাক চতুর একটা মেয়ে নিয়ে আসবেন। দেবনারায়ন সেই সময় কলিয়ারির কাজ দেখতে কিছুদিনের জন্য ছোট নাগপুর অঞ্চলে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে ঘোষণা করেন সুরেনের জন্য তিনি পাত্রি ঠিক করে ফেলেছেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি সুরেনের বিয়ে দেবেন।
এরপরেই দেবনারায়ন তার খালি জমির একদম দক্ষিণ দিকে এই বাড়িটির অনুরুপ আর একটি বাড়ি তৈরি করতে শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই বাড়িটি তৈরি হয়ে যায়। এই বাড়িটির নাম দেন দক্ষিণ মহল।
কিছুদিন পরে দেবনারায়ন তার পছন্দ করা পাত্রি বিনোদিনীর সাথে সুরেনের বিয়ে দিয়ে দেন। ঋতম্ভরাও সুন্দরি ছিল কিন্তু বিনোদিনীর সৌন্দর্যের মধ্যে আলাদা একটা চটক ছিল। চোখ মুখ বলে দেয় মহিলা ভীষণ বুদ্ধিমতি। কিন্তু বিনোদিনীর পরিবার সম্পর্কে কিছু জানতে পারা যায় না। অদ্ভুতভাবে এই বিষয়ে দেবনারায়নও মুখে কুলুপ এঁটে থাকে। দেবনারায়ন অসম্ভব রাশভারি মানুষ ছিল, তাই কেউ সাহস করে তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে পারে না।
এরপরে দেবনারায়ন উত্তর মহলটা বড় ছেলেকে দিয়ে আর নিজে সুরেন ও বিনোদিনীকে নিয়ে দক্ষিণ মহলে চলে আসেন। সময় বয়ে চলে। বিরেন ও ঋতম্ভরার পরপর তিনটি পুত্র সন্তান হয়, মনোজ, সরোজ ও ধিরজ। বিনোদিনীরও একটি ছেলে হয়, দেবেন্দ্র। ধিরজ আর দেবেন্দ্রর মধ্যে মাত্র এক মাসের বয়সের তফাতে ছিল।
দেবেন্দ্রর বয়স যখন দুই তখন হঠাৎ সুরেন এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। ছোট ছেলের মৃত্যুতে দেবনারায়ন শোকে পাথর হয়ে যান। অভিশাপ যে পিছু ছাড়েনি সেটা দেখে দেবনারায়ন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু বিনোদিনী অদ্ভুতভাবে শোক সামলে শক্ত হাতে সংসার ও ব্যবসার হাল ধরেন। বিনোদিনীর এই কর্তব্য নিষ্ঠা দেখে লোকে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়। ধীরে ধীরে দেবনারায়নও বিনোদিনীর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। বাড়ির থেকে আর তিনি বেরতেন না, ব্যবসার দায়িত্ব বিনোদিনীর হাতে ছেড়ে দেন। কিছুদিনের মধ্যে বিনোদিনী তুখোড় ব্যবসায়ী বুদ্ধির পরিচয় দেন আবার দেবনারায়নের হাতে যেসব ব্যবসা ছিল তার প্রধান হয়ে যান। যথারীতি একজন মহিলার এই উত্থানে অনেকের চোখ টাটায়। শ্বশুর বৌমাকে নিয়ে নানা ধরণের রসাল গল্প লোকের মুখে কানা ঘুসোয় ঘুরতে থাকে। দেবনারায়ন এই বিষয়ে কিছু জানতে না পারলেও বিনোদিনীর কানে সবই যায়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে বিনোদিনী এসব গল্পে পাত্তা দেয় না।
ছোট ছেলের মৃত্যুর ঠিক দু বছর পরে দেবনারায়ন আচমকা আত্মহত্যা করে বসেন। হত্যা না আত্মহত্যা এই নিয়ে সেই সময় বিশাল সোরগোল পড়ে যায়। বিশেষ করে দেবনারায়নের বড় ছেলে বিরেন দাবি করতে থাকে এটা হত্যা বলে। যথারীতি তার অভিযোগের আঙ্গুলটা বিনোদিনীর দিকে থাকে।
এই সময় জানতে পারা যায় রায় পরিবারের ব্যবসার সত্তর ভাগ বিনোদিনী তার শ্বশুর দেবনারায়নকে দিয়ে নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছেন। রাগে, অন্ধে বিরেন দিশেহারা হয়ে দেবনারায়নের মৃত্যুটাকে হত্যা বলে প্রমান করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। কিন্তু কোন এক অজানা কারনে তদন্ত এগোয় না। ধীরে ধীরে সময় বয়ে যায়, কেসটা ধামাচাপা পড়ে যায়। সেই থেকে বিরেন ও তার পরিবারের সাথে বিনোদিনীর মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়।
দেবনারায়নের মৃত্যুর দু বছর পরে আবার একটা বিপর্যয় রায় পরিবারের উপর নেমে আসে। বিরেনের স্ত্রী ঋতম্ভরাও আত্মহত্যা করে বসেন। বিরেন সেই সময় ব্যবসার কাজে বাইরে ছিল। তদন্তের প্রথমে পুলিশ এটাকে হত্যা বলে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী বালিস চাপা দিয়ে দমবন্ধ করে তারপরে শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঋতম্ভরাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে পুলিশ এটাকে আত্মহত্যা বলতে শুরু করে। সেই নিয়ে বিরেন প্রথমে লম্ফঝম্প করে কিন্তু কিছুদিন পরে হঠাৎ করে চুপ মেরে যায়। কি কারনে বিরেন চুপ মেরে যায় সেই বিষয়ে কিছু জানা যায় না। কিন্তু এর ফলে যেটা হয় বিরেনের সাথে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সম্পর্ক একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
সময় বয়ে যায়, বিরেনের তিন ছেলে মনোজ, সরোজ ও ধিরজ আর বিনোদিনীর ছেলে দেবেন্দ্র বড় হয়ে ওঠে।
এখান থেকে আসল গল্প শুরু।
পাঠকদের জানাই, এই গল্পের সময়কাল সত্তর দশকের। সেই সময় জন সাধারনের হাতে মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট কিছুই ছিল না। ল্যান্ড ফোন দেখা যেত তাও সেটা মোটামুটি ধনিদের বাড়িতে শোভা পেত। তাই এই গল্পে কোন মোবাইল, কম্পিউটারের কোন ব্যবহার পাওয়া যাবে না।
*****আরও একটা বিষয়ে পাঠকদের অবগত করাই, গল্পটিতে দুটি ভাগ আছে, প্রথমটিতে কেচ্ছা (কেচ্ছার ভাগ) দ্বিতীয়টিতে খুন ও খুনের তদন্ত। কেচ্ছা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি অতীতে ঘটে গেছে আর এগুলি পরিবারের সদস্যদের মুখ থেকে শোনা যাবে। খুন ও খুনের তদন্ত বর্তমান ঘটনা, সেটি সাধারন গল্পের আকারে আসবে। আর একই সাথে দুটি চলবে।
***** এই পর্যন্ত একটি ভালো মত মনোযোগ দিয়ে পড়ে নেবেন। কারন এখানে চরিত্রগুলোর মধ্যকার সম্পর্কটা খেয়াল রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ!