২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে নীল ট্রেনে করে রেনুকুট যাচ্ছিলো, ইন্টারভিউ দিতে। ঘটনা চক্রে ঠিক সেইদিন মাহি ওর বাবা আর মায়ের সাথে বাড়ি ফিরছিল। মাহির বাবা সন্তোষ ঘোষাল রেনুকুট থার্মালে কাজ করেন। আর সেদিন কোলকাতায় ছুটি কাটিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। আমাদের নীলাকাশও এসি টু টায়ারের একই কুপে ছিল। রাত্রি ন’টায় ট্রেন ছাড়া পড়েই মাহির বাবা আর মা খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়েন।
মাহির নীলকে দেখে বেশ ভালোই লেগেছিল। নীলেরও মাহিকে দেখে কোনও এক অজানা কারনে মনে হয়েছিলো এই সেই মেয়ে যার জন্যে সে এতদিন অপেক্ষা করেছে। মাহির বাবা মা দুই লোয়ার বার্থে ঘুমিয়ে। একটা ২৪ বছরের ছেলে আর ২১ বছরের মেয়ের গল্প করা শুরু হয়। দুজনে দুই আপার বার্থে বসে আর তাই বেশ জোরে জোরেই কথা বলছিল। মিঃ ঘোষাল নাক ডেকে ঘুমালেও মিসেস ঘোষাল ওদের কথার জন্যে ঘুমাতে পারছিলেন না।উনি মেয়েকে বলেন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে। কিন্তু মাহি বলে যে ওর নীলের সাথে পূরানো বাংলা গান নিয়ে কথা বলতে খুব ভালো লাগছে। মিসেস ঘোষাল বলেন, “ভালো লাগছে তো দুজনে একই বার্থে বসে গল্প কর আর একটু আস্তে কথা বল।”
romantic golpo
মিসেস ঘোষালের কথা শুনে নীলের অস্বস্তি হলেও মাহি সেটার কোন পাত্তা দিল না। তাই আর কিছু না বলে নিজের বার্থ থেকে নেমে সে সোজা নীলের বার্থে উঠে গেল। মাহির সেই আচরণে নীল একটু হলেও অবাক হল আরও অবাক হল মাহির মায়ের ব্যবহারে। উনি খারাপ কিছু ভাব্বেন না তো? কিন্তু ওনার মেয়ের ওপর মিসেস ঘোষালের বিশ্বাস দেখে অবাক হল নীল। দুজনে মুখোমুখি বসে বাংলা গান নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। বাংলা গান থেকে পূরানো বাংলা গান। তার থেকে পূরানো বাংলা সাহিত্য। সেখান থেকে চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতির কবিতা।
গল্প করতে করতে ওরা দুজনেই খেয়াল করেনি যে কখন নীল একদিকে হেলান দিয়ে বসে আর মাহি ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে। মাহির হাত নীলের হাতে ধরা।
মাহি কি মনে হতে বেশ নিচু গলায় গেয়ে ওঠে, “আমার হাত ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা, আমি যে পথ চিনি না…”
নীল জিজ্ঞাসা করে, এই গানটা কে গেয়েছে ?
মাহি উত্তর দেয়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। romantic golpo
নীল আবার জিজ্ঞাসা করে, প্রথম কে গেয়েছে ?
মাহি বলে, জানি না।
নীল বলে, প্রথম গেয়েছিলেন আঙ্গুরবালা দেবী। লেখা আর সুর ধীরেন চক্রবর্তীর।
সেই শুনে মাহি অবাক হয়ে বলে, “অতো শত জানিনা। পুরানো গান শুনতে ভালো লাগে তাই শুনি”
নীল জিজ্ঞাসা করে, “আমি কিন্তু এই হাত ধরে চলতে রাজী আছি। তুমি কি রাজী ?”
মাহি একটু লজ্জা পায় আর বলে, “সেই ভেবেই তো গাইলাম”। মাহি নীলের হাত নিজের বুকে চেপে ধরে। নীলের মন ওর নরম আর গরম বুকের ছোঁয়ায় জ্বলে যায়। সেদিন নীল হাত সরিয়ে নিতে যায় না। তবে নিজের থেকে কিছু করেও না। মাহি ঠোঁট একসাথে করে নীলের মুখের কাছে এগিয়ে দেয়। নীলও কোনও সংকোচ না করে ওর ঠোঁটে চুমু খায়। মাহি ওর কোলে আবার মাথা রেখে শুতে গেলে ওর শক্ত লিঙ্গের ছোঁয়া পায়। নীলের অস্বস্তি হলেও কিছু করতে পারে না। মাহি সব বুঝতে পেরে আলতো হেসে আবার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে| মন দুলে ওঠে ওদের । romantic golpo
এরপর দুজনে কত রাত পর্যন্ত গল্প করেছিলো ওরা তা জানে না। ভোর বেলা মিসেস ঘোষাল ঘুম ভেঙে দেখেন যে নীল একধারে বসে বসে ঘুমাচ্ছে আর ওনার মেয়ে ছেলেটার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে। উনি মিঃ ঘোষালকে আসতে করে ডেকে দেখান। মিঃ ঘোষাল কিছু না বলে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। মিসেস ঘোষাল জলের গেলাস নীচে ফেলে দিয়ে পাস ফিরে ঘুমানোর ভান করেন। গেলাস পড়ার শব্দে নীলের ঘুম ভেঙে যায়। মাহিকে ওর কোলে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে লজ্জা পেয়ে ওকে ডেকে দেয়।
মাহি চোখ খুলে বলে, “কি হল সকাল সকাল ঘুম ভাঙ্গালে কেন ?”
নীল অবাক হয়ে বলে, “তুমি কোথায় শুয়ে আছো দেখেছো !”
মাহি নির্লিপ্ত গলায় বলে, “তোমার কোলে শুয়ে আছি, তাতে কি হয়েছে ! এখন থেকে এখানেই তো শুয়ে থাকবো।”
নীল অপ্রস্তুত হয় আর বলে, “সে না হয় হল। কিন্তু তোমার বাবা মা দেখলে কি বলবেন ?” romantic golpo
মাহি উত্তর দেয়, “এখন থেকে ওনারা তোমারও বাবা মা। আর ওনারা কিছুই বলবে না। ওনারা ওনাদের মেয়েকে খুব ভালো ভাবে জানেন।”
নীল মাহির হাত ধরে উঠিয়ে দেয় আর বলে, “আমি সব বুঝতে পাড়ছি। আমি তোমার সাথেই বাকি জীবন কাটাবো। কিন্তু এটা তো ভারতবর্ষ। এখানকার সমাজ আমাদের যতদিন না আনুষ্ঠানিক বিয়ে হচ্ছে তত দিন এভাবে ঘুমাতে দেবে না। তাই লক্ষ্মী সোনা এখন নিজের বার্থে গিয়ে ঘুমাও।
মাহি আর কিছু বলে না। চুপ করে উঠে পড়ে। নীলকে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁটে একটা চুমু খায়। তারপর নিজের বার্থে চলে যায়। নীল ওকে বলে রাগ না করতে। মাহি হেঁসে উত্তর দেয়, “রাগ করলে তোমাকে চুমু খেতাম না তোমাকে।”