– আমি মরব না দিদি। এতো ভাবিস না
– জানি কস্ট পেয়েছিস আমি মেরেছি বলে।
– না রে দিদি এর একশ গুন মার খেয়েছিলাম, যেদিন তোকে আর ললিত দা কে আমি ভাগিয়েছিলাম। মুখ টা আমার এর দশ গুন ফুলেছিল।
দিদি আর থাকতে পারল না। আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি বললাম
– কস্ট টা আজকে বেশী পেলাম কারন তুই শুনলি না আমার কোন কথা। আমিও খুব বয়স্কা নই রে। আমিও আঠাশ মাত্র। আমার ও জীবনে, শরীরে প্রেম আছে। প্রেম আসে। বিশ্বাস কর, অর্জুনের সাথে আমি চুমুও খাই নি কোন দিন। সেও চায় নি। আজকেও বলে গেল, কোন শারীরিক মোহ নেই আমার প্রতি ওর। কিন্তু ভালবেসে ফেললে কি করব আমি। আমি তো মরতেও গেলাম।
new golpo
সে বলে গেল, যার জন্যে মরে যাবে, সেও যদি তোমার মরনের পরে স্বেচ্ছা মৃত্যু বেছে নেয়, তোমার মৃত্যু টা ত বিফলে যাবে। দিদি আমি তো লজ্জার ভয়ে মরতাম না। আমি মরতাম ওকে বাঁচাতে। আমার জীবন যদি ওর জীবন হয়, মরনে আমার কি লাভ বলতো? না রে তার থেকে ও একটা ভালো কথা বলে গেল। বলে গেল কেউ কারোর যখন হতে পারব না, তখন একলাই থাকি দুজনে। বাস একবার করে আমাকে দেখতে চেয়েছে দিনে। আপাতত ওকে আটকানোর বেটার অপশন এই মুহুর্তে আর কিছু ছিল না আমার কাছে।
শেষ কথাটা বলতে বলতে আমি হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললাম। দিদিও ততোধিক জোরে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে চেপে ধরল বুকের মাঝে। কাঁদতে কাঁদতেই, দিদিকে শুরু থেকে, অর্জুন সম্পর্কিত সব ঘটনাই বললাম। মাঝে একদুবার চা করে খেয়েছি দুজনে। আমার কথা শুনতে শুনতে, দিদি আমাকে বারংবার জড়িয়ে ধরছিল আর গালে চুমু খাচ্ছিল। আমাকে মারা টা যেন দিদি কে বিঁধছিল। আমি কস্ট পাই নি দিদির মারে। দিদি তো আমার লজ্জার কথা ভেবেই যা করার করেছিল। যে কেউ করবে। new golpo
আমারি নিজের ঘেন্না লেগেছিল নিজেকে, যখন আমি বুঝেছিলাম আমি ওই ছোঁড়া কে ভালবেসে ফেলেছি। দিদিকে বললাম সব কিছু গুছিয়ে যত টা বলা সম্ভব। দিদি সব শুনে বলল
– এখন ওকে আটকেছিস, ভালো করেছিস। টাইম নিয়েছিস ওর থেকে।
আমি সাড়া দিলাম না দিদিকে। দিদি বলেই চলল
– তুই কি সত্যি চাস ও অন্য মেয়েকে বিয়ে করে সুখী হোক।
আমি হাঁ হাঁ করে উঠলাম।বললাম
– যত ঠাকুরের দিব্যি বলবি আমি কাটব। আমি চাই ও সুখি হোক।
বলতে পারলাম না আমি দিদিকে, আমি চাই অন্য মেয়েকে বিয়ে করে ও সুখী হোক। হায় রে মন। দিদি খেয়াল করল না ব্যাপার টা, কিন্তু নিজে বলতে থাকল.. new golpo
– বেশ তবে শোন, ও তো ওর মনের কথা তোকে বলবেই। তুই কিন্তু তোর মনের কথা ওকে বলিস না। তবে কিন্তু ও দুর্বল হয়ে যাবে তোর উপরে মারাত্মক রকম। তোকে সমঝে চলতে হবে।
– আচ্ছা বলব না আমার মনের কথা।
ওকে মনের কথা বলব না। পরে চিন্তা করে হাসলাম। ও কি আমার বলার উপরে নির্ভর করে রে দিদি? ও চোখ পড়ে নেয়। আমি কোন কালে ওকে বলেছিলাম খড়গপুরে, যে ওকে আমি ভালবাসি? কিন্তু ও জেনে গেছিল। ওকে আটকাতে হলে আমাকে অভিনয় করতে হবে। কিন্তু সে তো আমি শিখিনি। জানিনা কি হবে।
বলে না দিন যায় আসতে আসতে সব সয়ে যায়। আমাদের প্রেম কাহিনী টা দিদির কাছে সয়ে গেল। এতো নিবিড় অথচ সরল প্রেম দেখে দিদিও আসতে আসতে গলতে শুরু করল। বা হয়ত ভেবেছিল, ধীরে ধীরে প্রেম টা কেটে যাবে। বা একটা একটা ষড়যন্ত্রের মতন । আমি খুব চুপচাপ হয়ে গেছিলাম। গন্ধ পাচ্ছিলাম সেই ষড়যন্ত্রের। আর নিজেকে ধীরে ধীরে সেই ষড়যন্ত্রের অংশীদার করে ফেলছিলাম। ওই ছোড়া মাঝে মাঝেই কলেজে আসত। ঘণ্টা দুয়েক হই হই করত, পার্ক বা রেস্টুরেন্ট এ দুজনে বসে গল্প করে আবার যে যার ঘরে। দিদির মনে চলতে থাকল, একটা সহজ সমাধান। যাতে আমরা আলাদা হয়ে যাই। new golpo
একবার বসেই, ইউ পি এস সি রিটিন ক্লিয়ার করে ফেলেছে। আই পি এস হতে চান উনি। ওর মা ও খুশী, ও আর বাইরে যায় নি বলে। শুধু জানে না আমাদের ব্যাপার টা। এদিকে আমার দিদি ও মাঝে মাঝে অর্জুন কে ডেকে পাঠায়। তবে একলা আমাদের কে আমাদের বাড়িতে আলাউ করে না। ভয়, সুন্দরী বোন কে দেখে বুনপো যদি নিজেকে সামলাতে না পারে? কি অবস্থা!!!! অপমানিত লাগে নিজেকে। কিন্তু এর থেকে ভাল কিছু আমার ও মাথায় আসে নি। আর অর্জুন টাও ধীরে ধীরে সাহসী হয়ে উঠছিল। সাথে আমার ও মনের লালসা বাড়ছিল, ওর সাথে থাকার ওর সাথে ঘর বাঁধার।
সামনেই পুজো। সবাই বাড়ি যাবে। আমি ঠিক করিনি কিছু। কিন্তু ভালো খবর শুনলাম, সেটা হলো অর্জুনের ইউ পি এস সি ক্লিয়ার হয়ে গেছে। ওর মা আমাকে খবর টা দিল। হায় রে কপাল কি করে বলি, ইন্টারভিউ দেবার আগে ও পরে ও অনবরত আমার সাথেই ফোনে ছিল। আমিও ওর মায়ের মুখে খবর টা শুনে খুশী হবার ভান করলাম। জয়েনিং পুজোর পরে আছে ওর। দিদি এই খুশী তে ওকে ডেকে পাঠিয়ে ছিল দিদির বাড়িতে। আমাকেও খবর টা দিল, আমি যেন সেদিনে থাকি। ভাই ও আসবে। new golpo
আমি কলেজ থেকে ফিরে গেছিলাম তাড়াতাড়ি। সাজলাম একটু। বিশেষ কিছু না। ততদিনে চুল টা লম্বা হয়েছিল আমার পিঠ অব্দি। অর্জুনের জোরাজুরি তে পার্লার থেকে শেপ করে এসেছি। সাধারন যা যা না করলেই নয়, সেই সব করলাম। সামান্য কাজল চোখে, হাতে পায়ের নেল পালিশ, হালকা লিপস্টিক। নাকে হীরের নাকছাবি টা পড়লাম, আমাকে অর্জুন দিয়েছে, দিন সাতেক আগে। দুম করেই দেখলাম আমার ব্যাগ এ ঢুকিয়ে দিল। হীরে টা বেশ বড়। আমার টিকালো নাক।
মন্দ লাগছে না। একটা দামি অথচ সাধারন শাড়ি পড়লাম। আমার চিরকাল ই হাতে আর গলায় কিছু থাকে না। কিন্তু ললিত দা, সেই পুরোন হারের বদলে আমাকে একটা ভিষন সিম্পল হার গড়িয়ে দিয়েছিল। সেটা পড়লাম। হাতে ঘড়ি থাকে সবসময়েই আমার। তাও অর্জুন একটা ঘড়িও দিয়েছিল আমাকে। সেটা পড়লাম। হালকা পারফিউম লাগালাম। new golpo
দিদির বাড়িতে পৌঁছে দেখি, অর্জুন আসে নি ভাই চলে এসেছে। সুবর্ন, ছুটে এসে আমার কোলে উঠে এল। ভাই ও এসে আমাকে প্রণাম করল। আমার খুব ভাল লাগল। আমার দিদি বলল
– হীরে টা বেশ সুন্দর লাগছে আমার বুনির নাকে। আজকে বুঝলাম, আমাদের চার বোনের মধ্যে তোকেই সব থেকে বেশি সুন্দরী লাগে। মেজদি খামখা ই গর্ব করে।
আমি লজ্জা পেলাম। আজকে অর্জুন আসবে আর এই সব কথা বলছে। লজ্জার ব্যাপার। দিদি কি ভাবছে আমি অর্জুনের জন্য সেজেছি? লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করল। আমি বললাম আমি একটু আসছি। দিদি মনে হয় বুঝল, আমি সাজগোজ তুলতে যাব। আমাকে বলল
– কোন দরকার নেই। সাজগোজ তুলে দিলেও, তুই এই রকম ই সুন্দরী থাকবি। new golpo
তা করতে করতেই অর্জুন এল। আমার দেওয়া একটা সাদা শার্ট আর নীল ফেড জিন্স টা পরে। কি যে লাগছিল ওকে দেখতে বলার না। দিদি উঠে গিয়ে নজর কাটা দিল ওকে। আমি রান্না ঘরে ছিলাম। জলের বোতল টা নিয়ে যেতেই, ও আমাকে দেখে হাঁ হয়ে গেল। ভাই এসেছে কত দিন পরে, অর্জুন ভাই এর সাথে কথা না বলে আমাকেই দেখতে লাগল। আমার শরীর কেমন যেন শিউরে উঠল। স্বাভাবিক করে দিলাম একটু। ভাই কে বললাম
– কি রে ভাই, কত দিন বাদে দেখলি বদমাশ টা কে?
– অনেক দিন রে দিদি। আচ্ছা অর্জুন এবারে কিন্তু পুজোতে তুই আসবি আমাদের বাড়ি
অর্জুন এর ও যাবার ইচ্ছে ছিল না। কারন আমি বলেছিলাম যাব না। ওর ইচ্ছে ছিল, আমি যাব না তাই ওই চারদিন দুজনে খুব ঘুরব নিজেদের মতন করে। ও বলে দিল
– নাহ যাব না। আমার জয়েনিং আছে পুজোর পরেই। আর তাছাড়া ট্রেনিং এর আগে নিজেকে একটু ফিট করে নিতে হবে।
– সে কী তুই যাবি না? দ্যাখ ছোড়দি, তুই কিছু বল না ওকে। new golpo
আমি বললাম অন্য দিকে মুখ করে।
– ও এখন বড় হয়েছে। কারোর কথা কি শুনবে?
ভাই অবাক ই হয়ে গেল। আমি যেমন ভাবে কথা টা বললাম তাতে অবাক হল। ভাই চিরকাল ই দেখেছে আমি ডমিনেটিং। নিজের মত অন্য কে দিয়ে মানাতে জানি। ততক্ষনে দিদি চলে এসেছে, বলল
– কে বলেছে যাবে না? কি অর্জুন যাবি না? আমাকে তো নান্দু বলল, সবাই যাচ্ছি আমরা। আর তুই যাবি না?
অর্জুন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি না অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম। রেগে গেল বুঝতে পারলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পরে অর্জুন মেনে নিল ও যাবে। আমিও দেখলাম ওর মধ্যে রাগ টা নেই। আর ভয়ঙ্কর ভাবে আমাকে দেখেই চলেছিল। কি জানি ভাই কিছু আন্দাজ করল কিনা। রাতে দিদি কে অনুরোধ করেও লাভ হলো না। new golpo
দিদি আমাদের দুজন কে কোন মতেই আলাউ করল না আমাদের বাড়িতে কিচ্ছুক্ষনের জন্য ও একলা থাকতে । অর্জুনের সামনেই বলে দিল, যখন আমরা ছাদে গল্প করছিলাম ভাই চলে যাবার পরে, যে তোমরা এখান থেকে সোজা যে যার বাড়ি যাবে। অর্জুন তুমি কোন মতেই নান্দুর কাছে যাবে না । অর্জুন বেচারী কি আর করে। মেনে নিল। বলল আচ্ছা ঠিক আছে সোজা চলে যাব এই পাড়া ছেড়ে।
রাতে বাড়ি পৌঁছে, আমি একটা সাদা নাইটি পরে চুল আঁচড়ে, শুয়েছি, আমার ঘরের ব্যাল্কনি দিয়ে একটা ঠক ঠক আওয়াজ পেতেই ভয় পেয়ে গেলাম। আমি উঠে দরজা না খুলে, জানালা টা খুলতে দেখলাম, অর্জুন ব্যাল্কনি তে দাঁড়িয়ে। হাসি পেয়ে গেল। বোঝ কান্ড। আমি দরজা খুলে দিতেই সোজা এসে বিছানায় শুয়ে পড়ল। new golpo
বললাম
– এটা কি রকমের দুষ্টুমি?
– আমি মনির কথা শুনেছি আর মেনেওছি। চলে গেছিলাম পাড়া ছেড়ে।কিন্তু যেতে যেতে ভাবলাম ইশ আরেকবার দেখে আসি। তাই পাড়ার বাইরে গাড়ী রেখে, হেটে এসেছি এখান অব্দি। তার পরে পাঁচিল ডিঙিয়ে ঢুকে পাইপ দিয়ে চড়ে তোমার ব্যালকনি তে?
– হুম, তা পুলিশ বাবু, এই রকম চোরের মতন আসার কারন? আমাকে তো পুরো সন্ধ্যে বেলাটাই আপনি দেখলেন খুব বিশ্রী ভাবে তাই না? ভাই যদি বুঝে যায় সুনু, তোকে কিন্তু আমি ছাড়ব না বলে দিলাম।
– আশ মেটেনি। কি দারুন মিস্টি লাগছিল।
– হুম তবে এসে ভালই করেছিস। new golpo
বলে গাল টা টিপে দিলাম বেশ করে।
– কেন?
– আমার ইচ্ছে করছিল তোকে দেখতে।
– হুহু দেখলে, আমি সব সময়ে নিজের কথা ভাবি এমন না।
– বেশ, হয়েছে অনেক নিজের ঢাক পেটানো। কোল্ডড্রিঙ্ক খাবি একটু?
– দাও। new golpo
খালি গায়ে শুয়ে আছে আমার খাটে। বিছানার পাশে ছোট টেবিল এ কোল্ড্রিঙ্কের গ্লাস টা নামানো। আমি ওর গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। ও মাঝে মাঝেই আমাকে জড়িয়ে ধরছে। এতে ওর কোন খারাপ ইচ্ছে নেই সেটা আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝছি। আমার শরীরের নানা পার্টে ওর হাত লাগছে। কিন্তু তার মধ্যে কোন বাজে ইচ্ছে আমি ওর দেখি না। দিদির ফোন এলো।
ধরতেই বলল
– দুষ্টু টা তোর কাছে না?
আমি হেসে ফেলে বললাম,
– হ্যাঁ এসে চিৎপাত হয়ে শুয়ে আছে। ভয় নেই তোর, আমি আর ও কেউ ই এত অপরিনত নই। হলে অনেক দিন আগেই যা হবার হয়ে যেত। new golpo
– হুম। ও কি থাকবে আজকে?
– না । ও এখানে থাকলে ওর মায়ের ফোন আসবে তোর কাছে।
– অলরেডি এসেছে। ও পৌঁছায় নি দেখেই তোকে কল দিলাম।
– আচ্ছা আমি ওকে পাঠাচ্ছি
ওকে উঠিয়ে পাঠাতে আমার আরো আধ ঘন্টা গেল। যাবার আগে প্রতিবারের মতন এবারেও ওর হাত ধরে আমাকে বলতে হলো যে আমি ওর ই ছিলাম আছি আর থাকব ও। আমি বলতে বললেও ও বলে দেবে। কিন্তু আমি আমার মনের কথা ওকে বলব না বলে ছোড়দি কে কথা দিয়েছি। আমাকে যখন জোর করে এই কথা টা বলতে বলে আমার ভালো লাগে। খুব লজ্জা করলেও বলে দি ওকে। ও খুশী হয়ে যায়। হয়তো মনে জোর পায়। new golpo
ও চলে যাবার পরে, মনটা মারাত্মক খুশী লাগছিল আমার। এটাই বা মন্দ কী। এই জীবন ও তো লিড করা যায়। ওকে দিনের মাথায় ঘণ্টা খানেক কাছে পেলেই আমার শান্তি। কত ভুল ছিলাম আমি। সত্যি প্রেমে পড়লে মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়।
পুজোতে সেবার সবাই বাড়ি গেলাম। ছয় বোন বাড়িতে। সবাই আমাকেই দেখছে। বুঝতে পারছি রূপ আমার ফেটে বেড়িয়ে আসছে। এই প্রথম বাড়ি গিয়ে আমি বাবাকে প্রণাম করলাম। আর অর্জুন টা এতো বদমাশ, ইচ্ছে করে আমি প্রণাম করার পরেই বাবা কে ছুটে এসে প্রণাম করল। কাউকে তো প্রণাম করে না। আজকে প্রণাম করল দেখে ওর মা বাবা খুশী হলো। কিন্তু আমার ছোড়দি বুঝল, আমার প্রণাম করার পরেই কেন ও বাবাকে প্রণাম করল। ঠিক হয়েছে। এর পরে আমি যতজনা কে প্রণাম করেছি, ওকেও তত জনা কেই করতে হলো। ব্যাপার টা কেউ বুঝতেই পারল না। কিন্তু আমি আর দিদি বুঝলাম।
আমার মা তো আমাকে বার বার নজর কেটে দিচ্ছে। মেজদি কিছু বলতে পারছে না, কিন্তু বার বার আমাকে দেখছে আরে ঠারে। হয়ত বুঝেছে, বাইরের নয়, ভিতরের সুন্দরতাই আসল।আমি এবারে মেজদি কেও প্রণাম করলাম। খুশী হলো কিনা জানিনা। কিন্তু মাথায় হাত দিল আমার। কি আশীর্ব্বাদ করল জানিনা। তবে খারাপ কিছু করে নি। করলে আজকে আমি এতো সুখী হতাম না। new golpo
ছয় বোন, পাঁচ জামাই, গোটা সাতেক নাতি নাতনি, এক ছেলে, ছেলের বিয়ের দেখা শোনা, মায়ের খুশীর অন্ত নেই যেন। আমি আর ছোড়দি, সারা দিনেই, মা কাকিমার সাথে লেগে আছি আগের মতই। মা তো কত করে বলছে আমাদের বাইরে যেতে আনন্দ করতে। কিন্তু আমাদের আনন্দ মা আর কাকির সাথেই।
আমার মরন, অর্জুন কে মাঝে মাঝেই দেখে আসতে হচ্ছে। না হলেই মনের ভিতর টা কেমন খালি খালি লাগছে। সে সারা দিন এদিক ওদিক করছে ভাই এর সাথে। ও যা যা পড়বে এই পাঁচদিন আমি সব ওকে কিনে দিয়েছি। কিছু ওকে আগেই দিয়েছিলাম, আর কিছু আমার সুটকেস এ আছে। চাবি ওর কাছেও থাকে।
আজকে সারা দিন এসে থেকে, একটা কালো হাফ টি শার্ট আর আকাশী জিন্স পরে ঘুরছে। হাতে একটা সোনার রিস্টলেট। বা হাতে ঘড়ি। এর সব গুলোই হয় আমার দেওয়া না হলে আমার পছন্দ করে দেওয়া। মা বলছে ছোড়দি কে
– অর্জুন টার স্টাইল বেড়েছে দেখেছিস? ও ছোঁড়া কোন মেয়ের চক্করে পড়েছে পাক্কা। new golpo
ছোড়দি আর আমি হেসে উঠলাম জোরেই।
হায় রে, মেয়েটা কে শুনলে মা ভির্মী খাবে। তবে আজকে বুঝলাম, আসলে আমার মা বুদ্ধিমতী, তাই আমরা। আমাদের এই জিন টা মায়ের থেকে আসা। সন্ধ্যে বেলায় চুপি চুপি আমার ঘরে এলো অর্জুন। সবাই তখন বাইরে প্যান্ডেল এ। আমিও যাব বলে শাড়ি রেডী করছিলাম।
আমি বললাম
– এই দুষ্টু, এখানে কি করছিস রে?
– আমার ঘর দেখতে এলাম
– ইইইইইইশ, এটা তোর ঘর কি করে হলো? যা ভাগ, নিজের মায়ের একটা ঘর, নিজের একটা ঘর, আবার এই ঘর টা ও নাকি ওনার ঘর!!! new golpo
– কেন নয়?
– শুনি, কি করে এটাও তোর ঘর হলো?
আমি জানি ও কি বলবে। আর সেটা শোনার জন্যেই মরে যাচ্ছি আমি।
– মা মাসী, মনি, ইন্দু, চাঁদ মাসী সবার নিজের ঘরে তাদের বর নিয়ে আছে। আর এটা আমার বউ এর ঘর। অতএব এটা আমার ও।
– একটা থাপ্পড় লাগাবো। আমি কি করে তোর বউ হলাম?
– মনে মনে তো হয়েই আছ। আমিও মনে মনে তোমার বর হয়েই আছি, সেই কবে থেকে
– তবে রে? এ বাড়িতে তোর ও একটা ঘর আছে। সেটা আমার টার থেকে অনেক বড়। new golpo
– তাও এই ঘর টাই আমার পছন্দের।
– কেন?
– অনেক কারন।
– কি শুনি।
আমি চুল আঁচড়াচ্ছিলাম আর ওর সাথে বকবক করছিলাম।
– প্রথমত, এই ঘর থেকে পুকুর টা দেখা যায়। একমাত্র এই ঘর থেকেই দেখা যায়। দ্বিতিয়ত, এটা বেশ খোলামেলা ঘর, আর সব থেকে যেটা বড় কারন, এই ঘরে এলে আমি তোমার সুগন্ধ পাই। তোমার গায়ের, তোমার চুলের।
– উফফ হয়েছিস খুব রোম্যান্টিক তুই। যা এখন আমি কাপড় ছাড়ব। new golpo
– না আরেক টু থাকি। যা সুন্দরী হয়েছ, ইদানিং দেখি সবাই তোমাকে ঘিরে থাকে। আর কেউ ঘিরে না থাকলে, তুমি রান্না ঘরে দিদুন কে হেল্প কর। আমি কোথায় পাই তোমাকে? এই জন্যেই তো আসছিলাম না মামার বাড়ী। ওখানে থাকলে কি সুন্দর দুজনে থাকতাম
– সেই জন্যেই তো তোর মনি আমাদের নিয়ে এলো এখানে টেনে। হ্যাঁ রে, এতো কথা কি আমার সামনেই বলিস? কই আর তো কথা বলতে দেখি না আমি। বাইরে কথা বললে এতো দিনে তো গার্ল ফ্রেন্ড এর লাইন লেগে যেত।
– সেই জন্যেই তো বলি না। আমার উপরে অধিকার একজনের ই আছে। আর এই বউ টার উপরে অধিকার শুধু আমার।
– খবরদার, আমি কি বউ নাকি?
– হ্যাঁ আমার বউ ই তো। new golpo
– আবার? এই সব কথা বাড়িতে কেউ বলে না। কেউ শুনলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। কথা দিয়েছিস তুই আমাকে।
– আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। অতো ব্ল্যাক্মেইল করতে হবে না।
চলে গেল ফুড়ুৎ করে। এই রকম ভাবে মাঝে মাঝে এসে আমাকে নাড়িয়ে দিয়ে যায়, আর আমি বাকি সময় টা নড়তে থাকি।